মানবদেহে বয়স ও লিঙ্গ ভেদে রক্তের লোহিত রক্তকণিকায় প্রয়োজনীয় পরিমাণ হিমোগ্লোবিনের একটি নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে কমে গেলে তাকে রক্তস্বল্পতা বা রক্তশূন্যতা (অ্যানিমিয়া) বলে। বয়স ও লিঙ্গ ভেদে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ভিন্ন ভিন্ন হয়। সাধারণত নবজাতকের শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ বেশি থাকে যা ২০০-২১০ প্রাম/লিটার। পুরুষদের ক্ষেত্রে ১৩০-১৮০ গ্রাম/লিটার এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ১১৫-১৬৫ গ্রাম/লিটার। একজন পূর্ণ বয়স্ক মহিলা বা পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ৭০-৮০ গ্রাম/লিটারের নিচে নেমে গেলে মারাত্মক রক্তশূন্যতা দেখা যায়। বিভিন্ন কারণে রক্তশূন্যতা হতে পারে। সাধারণত মহিলা এবং শিশুরা এতে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।
রক্তশূন্যতার কারণগুলোর মধ্যে অন্যতম হল:
খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে লৌহের জোগান না থাকা। দীর্ঘ মেয়াদি কোন অসুখ যেমন: হজমে সমস্যা, অন্ত্রের অসুখ, দীর্ঘদিন আমিষ জাতীয় খাবারের ঘাটতি, পাকস্থলীর বাইপাস অপারেশন ইত্যাদি। জন্মগতভাবে অতিরিক্ত পরিমাণে লোহিত রক্তকণিকা ভেঙে যাওয়া। রক্তক্ষরণ, পেপটিক আলসার, পাইলস, কৃমির সংক্রমণ, মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, ঘন ঘন গর্ভধারণ ইত্যাদি কারণে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলে রক্তশূন্যতা হতে পারে। এছাড়া কোন কারণে লোহিত রক্তকণিকা কম তৈরি হলে।
রক্তশূন্যতার উপসর্গগুলোর মধ্যে অন্যতম হল:
অবসাদগ্রস্ত থাকা, ক্লান্তি অনুভব করা, স্বল্প পরিশ্রমে শ্বাসকষ্ট, মাথা ঝিম ঝিম করা, চোখে ঝাপসা দেখা মাথাব্যথা করা, বুক ধড়ফড় করা, বুকে চাপ বা ব্যথা অনুভব করা, শরীর হাত ও পা ফ্যাকাসে হয়ে আসা ইত্যাদি। রক্তশূন্যতার উপসর্গ দেখা দিলে চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু পরীক্ষা করতে হতে পারে। রক্তশূন্যতার সঠিক কারণ নির্ণয় করে যথাযথ চিকিত্সা গ্রহণ করতে হবে।